২৬ লক্ষ ছাত্রের ভবিষ্যৎ নিয়ে ছিনিমিনি খেলা চলছে
২৬ হাজার শিক্ষকের ভবিষ্যৎ নয় ; ২৬ লক্ষ ছাত্রের ভবিষ্যৎ নিয়ে ছিনিমিনি খেলা চলছে
বেসরকারিকরণ আসল উদ্দেশ্য! শিল্পপতিদের হাতে সমগ্র শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ধীরে ধীরে তুলে দেওয়া এটাই প্রধান উদ্দেশ্য।
---পীযুষ গায়েন
২৬ লক্ষ ছাত্রের ভবিষ্যৎ নিয়ে ছিনিমিনি খেলা চলছে
২৬ হাজার শিক্ষকের ভবিষ্যৎ নয় ; ২৬ লক্ষ ছাত্রের ভবিষ্যৎ নিয়ে ছিনিমিনি খেলা চলছেবেসরকারিকরণ আসল উদ্দেশ্য! শিল্পপতিদের হাতে সমগ্র শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ধীরে ধীরে তুলে দেওয়া এটাই প্রধান উদ্দেশ্য। শহরের ছেলেমেয়েদের সমস্যা কম। কারণ তারা বেশিরভাগ বেসরকারি স্কুলে পড়ে। কিন্তু গ্রামের দরিদ্র, পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর মানুষের ছেলেমেয়েদের শিক্ষা আজ প্রশ্নের মুখে ।
সবাইকে অনুরোধ করব বিষয়টির গভীরতা অনুধাবন করতে !
চাকরিহারা/ ক্ষণস্থায়ী শিক্ষকদের প্রতিআপনারা যোগ্য, মানছি। আপনাদের সাথে খুব অন্যায় হল, মানছি। আপনাদের এক একজনের ডিগ্রি, মেধা কোন কিছুতেই কম নন। ৬-৭ বছর চাকরি করার পরে এখন বলা হচ্ছে চাকরি থাকবে না। এমন কখনো এর আগে এক সঙ্গে এত মানুষের চাকরি গিয়েছে কিনা সন্দেহ আছে। সত্যি খুবই খারাপ লাগছে। আপনারা নিরীহ মানুষ।
ভালো ছেলে-মেয়ের মতো শুধু পড়াশোনা করে গেছেন। স্বপ্ন দেখেছেন চাকরি পাওয়ার । পেয়েছেন।আপনারা বলছেন— আপনারা কখনও কোনো রাজনীতি করেন নি। অর্থাৎ নির্বাচনী ব্যবস্থায় যোগদান করেননি !
আচ্ছা ভোট তো দিয়েছিলেন! কাকে দিয়েছিলেন, কাদেরকে দেশ চালানোর জন্য দায়িত্ব দিয়েছিলেন। কারা তারা? যারা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল দেশের কল্যাণ করবে । জনসেবা করবে ! জনগণের প্রতিনিধিত্ব করবে! যাদেরকে আপনারা ভোট দিয়েছিলেন তারা কি সৎ ছিল? তারা কি সত্যিই জনগণের প্রতিনিধিত্ব করার উপযুক্ত ব্যক্তি ?
যদি সঠিক ব্যক্তি হয়ে থাকে তাহলে আপনাদের তো কোন সমস্যা হওয়ার কথা নয়! আর যদি না হয়ে থাকে, তাহলে প্রতিবাদ করেন নি কেন? তখন কি মুখ বন্ধ করে চুপচাপ ভোটটা দিয়েছেন ।
জনগণ তার জনপ্রতিনিধি ঠিক করবে সঠিক ব্যক্তিকে ভোট দিয়ে। গণতান্ত্রিক দেশে নির্বাচনী ব্যবস্থার মাধ্যমে সবচেয়ে বড় প্রতিবাদ করা যায়। সঠিক জনপ্রতিনিধি নির্বাচন সমগ্র জনগণের কাছে কল্যাণের বিষয়। তাহলে ভোটটা সঠিক ব্যক্তিকে দেয়া উচিত ছিল। যদি অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে আপনারা নিজেরা না শেখেন, তাহলে ছাত্রদের আপনারা কি শেখাবেন ?
আপনারা তো ছাত্রদের শিক্ষা দেন? কি শিক্ষা দেন? অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে শিখিয়েছেন ? ঠিক এইখানে এসেই আমাদের প্রশ্ন জাগছে, করেন নি কেন?
হ্যাঁ, আপনাদের প্রশ্ন করছি, গণতান্ত্রিক দেশে নির্বাচনী ব্যবস্থায় যোগদান করেননি কেন? রাজনীতি, রাজধর্ম, রাজদণ্ড, শাসক, ক্ষমতা এই শব্দগুলি রাজতন্ত্রের শব্দ।
এখন প্রশ্ন তাহলে গণতন্ত্রের শব্দগুলি কি ? গণতন্ত্রের শব্দ হল জনসেবা, জনসেবক, জনপ্রতিনিধি। (Public Service, Public Servant, Public Representatives) যত বড়ই সরকারি পদাধিকারী হোক না কেন তিনি আসলে পাবলিক সার্ভেন্ট। জনসেবা করাই তার আসল কাজ। দেশের পরিচালকদের মূল দায়িত্ব প্রতিটি মানুষের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কর্মসংস্থান নিশ্চিত করা। যদি তারা তা না পারেন তাহলে তাদের দেশের দায়িত্ব নেওয়া উচিত নয়। প্রতিটি মানুষের প্রধান সম্পদ শিক্ষা আর স্বাস্থ্য আর তারপরে কর্মসংস্থান।
ভারতবর্ষ ধনী, ভারতীয়রা গরীব!ভারতের সম্পদের অভাব নেই। অথচ তা কুক্ষিগত মুষ্টিমেয় ব্যক্তির হাতে। আর তার পিছনে প্রধান কারণ দেশের সঠিক পরিচালকের অভাব। শিক্ষক নিয়োগ যখন টাকার খেলায় পরিণত হলো—তখন! তখন কী ভাবছিলেন? ভেবেছেন, আপনি তো ভালো মানুষ, এসবের মধ্যে থাকেন নি, আপনি সৎ মানুষ, নিজের যোগ্যতায় চাকরি পেয়েছেন, আপনার কিচ্ছু হবে না!
শিক্ষামন্ত্রী তার গার্লফ্রেন্ড সহ জেলে। খাদ্যমন্ত্রী গরীব মানুষের বরাদ্দ নিজে খেয়ে এখন জেলে। এসবে আপনার কি! শিক্ষকতার চাকরি পেয়েছেন, আপনি নিরীহ ভালো মানুষ, এবার জমিয়ে সংসার করবেন। ছেলেপুলে করবেন, নিজের আদর্শে তাদের বড় করবেন, এইতো!
পাশের বাড়িতে আগুন লেগেছে দেখেও আপনার ঘুম ভাঙেনি। কিন্তু আজ সেই আগুন আপনার ঘরে। ভাবুন, আজ যদি আপনার আশেপাশের মানুষগুলোও ঠিক আপনার মত নির্লিপ্ত থাকে! আপনি নির্বাচনী ব্যবস্থায় যোগদান করবেন না, দূরে থাকবেন !
অশিক্ষিত, অর্ধশিক্ষিত, অসৎ, গুন্ডা, বদমাশ এরা যদি দেশের পরিচালনার দায়িত্ব নেয় আর আপনার মাথার উপরে উঠে নাচে, কর্তৃত্ব ফলায়, অত্যাচার করে, আপনি একদিকে মুখ ফিরিয়ে থাকবেন?
আপনার অঞ্চলে স্কুল হবে, কলেজ হবে, হাসপাতাল হবে, রাস্তা হবে, জলের লাইন হবে, বেকারদের চাকরি দেওয়া হবে এগুলো কি সামাজিক কাজ নয় ? এগুলোই আসল সামাজিক কাজ। আর এই কাজগুলো কে করতে পারে? এই কাজগুলো করতে পারে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি। তাহলে নির্বাচনী ব্যবস্থায় যোগদান করা আসল সামাজিক কাজ।
নিরপেক্ষ' থাকাটা আসলে এক ধরনের ছদ্মনিরাপত্তা, যা দুষ্ট শাসনের হাত থেকে রক্ষা করতে পারে না। এতদিন নিজেকে নিরাপদ ভেবে কত বড় ভুল করছিলেন। অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই না করে, তাকে নীরবে মেনে নিয়ে কেউই টিকে থাকতে পারে না, পারবে না।
অন্যের ঘরে আগুন লাগলে ঘরের মধ্যে মুখ লুকিয়ে থাকলে আপনার ঘরও যেকোনো সময় পুড়তে পারে, এটা বুঝতে হবে। সংবিধানকে রক্ষা করতেই হবে ।
বামপন্থা নয়, ডানপন্থা নয়, এখন আম্বেদকরপন্থাই আমাদের মুক্তির পথ। আর এইজন্যেই কয়েকটি আম্বেদকরপন্থী দলগুলোকে ঐক্যবদ্ধ করে মূলনিবাসী ফ্রন্ট তৈরি হয়েছে।
আর চুপ করে থাকবেন না, এগিয়ে আসুন । আপনি শিক্ষিত মানুষ দেশের প্রতিনিধিত্ব করার উপযুক্ত ব্যক্তি। বাবাসাহেব আম্বেদকর আপনার হাতে যে সংবিধান তুলে দিয়েছেন তাতে আপনিও মুখ্যমন্ত্রী বা প্রধানমন্ত্রী হওয়ার অধিকারী। কারোর কাছে আর ভিক্ষা নয়। নিজের অধিকার নিজে বুঝে নিন। নিজেদের প্রতিনিধিত্ব নিজেদের করতে হবে।
জনগণ ঠিক করবে তার জনপ্রতিনিধি। আর জনগণ তার প্রচার করবে । কোন শিল্পপতি নয়। মূলনিবাসী ফ্রন্ট সমর্থিত মূলনিবাসী পার্টি অফ ইন্ডিয়ার পক্ষ থেকে ।
মূলনিবাসী পার্টি অফ ইন্ডিয়া একটি গণতান্ত্রিক দল। আমরা রাজনৈতিক দল বলি না, কারণ আমরা গণতন্ত্রে বাস করি, রাজতন্ত্রে বাস করি না।
💪জয় সংবিধান! জয় ভারত !